top of page

আপনার স্ত্রী/মেয়ে কে হায়ার স্টাডিজ ও রিসার্চে সুযোগ দেবেন তো?

Writer: sschoolbdsschoolbd

Updated: Oct 28, 2021



পৃথিবীতে অনেক মেধাবী পুরুষ সেলিব্রিটি পদার্থবিদ, আর গাণিতিক প্রতিভাবান বিজ্ঞানী আজ পর্যন্ত এসেছেন। জন্মগতভাবে তাদের সন্তানদেরও একই বুদ্ধিমত্তা থাকার কথা ছিল যদি বাবার কাছ থেকেই বুদ্ধিমত্তা জিনিসটা বংশীয়ভাবে আসতো। যেহেতু সেটা হয়নি, তাই বলা যায় যে, বাবার কাছ থেকে সন্তানের বুদ্ধিমত্তা সরাসরি হয়তো আসে না। কেন বলছি একটু পরেই ব্যাখ্যা করছি।


যে সকল রক্ষনশীল পরিবার এবং পুরুষ মেয়েদের উচ্চশিক্ষা, ও গবেষণা করাকে এখনো সহজে গ্রহণ করতে পারেন না, তারা পবিত্র আল-কুরআন খুললেই দেখবেন যে আল্লাহ অনেক জায়গাতেই বলেছেন তার সৃস্টি নিয়ে যারা ভাবে তাদের চিন্তার জন্য আল্লাহ অনেক নিদর্শন রেখেছেন। এক অর্থে চিন্তা-ভাবনা করাই কিন্ত একজন গবেষকের কাজ। পদার্থবিজ্ঞান ও গণিতের সূত্রাবলি, এবং সিমেট্রি (প্রতিসাম্য) সব কিছুই আল্লাহর সৃষ্টি এবং জ্ঞানের অংশ। পবিত্র আল-কুরআন তো আল্লাহ ছেলে মেয়ে উভয়ের জন্যই নাযিল করেছেন। আল-কুরআনে যেখানে আল্লাহ স্বয়ং চিন্তা-ভাবনা ও গবেষণা করতে সবাইকে উৎসাহিত করেছেন সেখানে মেয়েদের উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ বা গবেষণা করার ইচ্ছেটাকে ধর্মীয় অনুশাসনের আবরণে দাবিয়ে রাখা ঠিক নয়। আল্লাহ আমাদের সকলকে হেদায়েত দিন।


যে পুরুষগণ হীনমন্যতায় ভুগেন যে স্ত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিজের থেকে বেশি হলে, বা স্ত্রী পিএইচডি ডিগ্রি পেয়ে গেলে নিজের আত্নসম্মানে লাগবে তারা এটা ভুল ভাবছেন। আপনি কোনো খেলার প্রতিযোগীতায় নামেননি। স্ত্রীর সাথে কম্পিটিটিভ নন বরং সাপোর্টিভ হন। চিন্তা করেই দেখুন, আপনার স্ত্রী উচ্চশিক্ষিত কিংবা ধরুন পিএইচডি ডিগ্রিধারী হলে আপনার সন্তানের ভবিষ্যতের পড়াশুনা অনেক খানিই এগিয়ে থাকবে। একাডেমিকালি প্রচুর দিক-নির্দেশনা ও পরামর্শ পাবে। দিন শেষে সন্তান ভালো কিছু করলে গর্ব ও নাম নেয়ার ব্যাপারে বাবারাই তো এগিয়ে থাকে!


আর আপনি মেধাবী হলেও, আপনার সন্তানেরা যে মেধাবী হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। শুরুতেই বলেছি যত পুরুষ মহারথী পদার্থবিজ্ঞানী, আর অতিমানবীয় গাণিতিক মেধার বিজ্ঞানীগণ পৃথিবীতে আজ পর্যন্ত এসেছেন , তাদের সন্তানরা সর্বক্ষেত্রে কি তাদের কার্বন-কপি হয়েছে? এটা এক কথায় উত্তর দিলে "না" বলতে হয় ।

বুদ্ধিমত্তা খুবই সূক্ষ্ণ বিষয়। কিছু কিছু বিচ্ছিন্ন অতীত গবেষণায় পাওয়া গেছে যে শিশুদের বুদ্ধিমত্তা বাবাদের তুলনায় মায়েদের কাছ থেকেই বেশী আসে। যদিও এটা কোন সার্বিক সিদ্ধান্তে আসার মত গবেষণা নয়। এবং বুদ্ধিমত্তার উৎপত্তি নিয়ে গবেষণারত বিজ্ঞানীগণ এখনো কোন ঐক্যমতে আজও আসতে পারেন নাই।

তবে আসুন কিছু বিজ্ঞানী দম্পতি সম্পর্কে জেনে নেই। আমার প্রকৌশল বিজ্ঞানের গবেষণায় বিচরণের অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু অতীত উদাহরণ তুলে ধরবো। উপসংহারে পৌছানোর ব্যাপারটি সম্পুর্ন ব্যক্তিনর্ভর।


যেমন কুরি ফ্যামিলি। বাবা পিয়েরে কুরি, মা মেরি কুরি দুজনেই পদার্থ ও রসায়ন বিজ্ঞানে নোবেল পুরুস্কার পেয়েছেন। আর তাদের সন্তান আইরিন কুরিও পরে রসায়ন বিজ্ঞানে নোবেল প্রাইয পেয়েছিলেন। মায়ের মেধার গুনে নাকি বাবার গুনে আইরিন কুরিও মেধাবী বিজ্ঞানী হয়েছিলেন তা হয়তো বোঝা গেল না, তাই না? তাহলে আসুন আরেকটা উদাহরণ বিবেচনা করি।


পদার্থবিজ্ঞানের মহারথী আলবার্ট আইন্সটাইনের প্রথম স্ত্রী মিলেভা ম্যারিক ছিলেন একজন গণিতবিদ আর তাদের প্রথম সন্তান হ্যান্স আইনন্সটাইন ছিলেন আমেরিকার বিখ্যাত ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া বার্কলির প্রকৌশল অনুষদের অধ্যাপক। হ্যান্স কিন্ত প্রকৌশল বিজ্ঞানে অনেক অবদান রেখে গেছেন। কিন্ত সেটা মায়ের গুনে নাকি বাবার গুনে এখানেও অবশ্য বোঝা গেলো না। তবে এই দুটি উদাহরণ থেকে এটুক অন্তত বোঝা গেলো মা-বাবা দুজনেই মেধাবী হলে সন্তানদের মেধাবী হবার সম্ভাবনা তীব্র।


আচ্ছা এখন এই উদাহরণে আসি যদি বাবা শুধু মেধাবী হন সেক্ষেত্রে সন্তান কি হতে পারে? আইন্সটাইনের পরবর্তী প্রজন্মের পদার্থবিজ্ঞানের আরেক মহারথী ছিলেন রিচার্ড ফাইনম্যান। ফাইনম্যান ও তার স্ত্রী গোয়েনেথ হাওয়ার্থের সন্তান কার্ল ফাইনম্যান। কার্ল তার বাবার অতিমানবীয় মেধার এক ছটাকও পান নাই। দর্শন ও ভাষাবিজ্ঞান নিয়ে স্নাতক করেছিলেন কার্ল। তারপর সুপরিচিত বিজ্ঞানী বাবার নাম ও প্রভাব ব্যবহার কোন রকম সম্মান বাচাতে মাস্টার্স করেছিলেন তড়িৎ প্রকৌশলে। প্রথমে ভাষাবিজ্ঞান ও দর্শন, এবং তড়িৎ প্রকৌশল। এরপর আর কোনো পড়াশুনা করেননি। আইনস্টাইনের পরে সবচেয়ে মেধাবী পদার্থবিদ বলা হয়ে থাকে রিচার্ড ফাইনম্যানকে। কার্ল তার বাবা রিচার্ড ফাইনম্যানের এক শতাংশ মেধা উত্তরাধিকারী সূত্রে পান নাই। এটা কি ফাইনম্যানের স্ত্রী গোয়েনেথ নিতান্তই সাধারন নারী ছিলেন শুধুই সে কারণে? সেজন্যই কি হয়তো কার্ল তার মার দিক থেকে বংশীয়ভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক মেধা পান নাই যদিও বাবা রিচার্ড ফাইনম্যান অতিমানবীয় মেধাবী ছিলেন? রিচার্ড ফাইনম্যান যদি আরেকজন মেধাবী নারীকে বিয়ে করতেন, তাহলে কি তাদের সন্তান মেধাবী হতো? প্রশ্নগুলোর উত্তর কারোরই জানা নেই। আমারও জানা নাই।তবে ব্যাপারগুলি বেশ ভাবনার উদ্রেক করে।


উপরের বিচ্ছিন্ন উদাহরণগুলোর হয়তো আদৌ কোনো সম্পর্ক নেই। হয়তো বা আছে। কেউই জানেনা। আমিও না। এতো সামান্য সংখ্যক তথ্য-উপাত্তের উপর ভিত্তি করে কোনো সার্বিক উপসংহারে পৌঁছানো যায়না। তবে উদাহরণগুলো থেকে হয়তো কিছুটা অনুমান করা যায় যে আপনার স্ত্রী ও মেয়েকে বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ও উচ্চতর পড়াশুনায় সু্যোগ দিলে তারা আপনাকে মেধাবী প্রজন্ম উপহার দিবে।

লিখাটি কপি করলে ক্রেডিট সহ করবেন। ধন্যবাদ।


লিখাটি ব্যবহার করতে চাইলে, অবশ্যই লেখকের নাম, ও প্রতিষ্ঠানের যথাযথ ক্রেডিট সহকারে করতে হবে।


লিখাটি লিখেছেন:

PhD researcher, Electrical & Computer Engineering

University of British Columbia, Vancouver, Canada

লিখাটি শেয়ার করুন ও ইউটিউবে আমাদের টিপস গুলি ফলো করুন। প্রতিদিন স্কলারশিপ নিউজ, ও প্রফেসর ফান্ডিং টিপস, IELTS, GRE টিপস পেতে এখুনি জয়েন করুন Scholarship School BD Website: www.sschoolbd.com

 
 
 

Comments


  • Facebook
  • YouTube
  • LinkedIn
  • Instagram

©2023 Scholarship School BD

Website designed by Md Nazmul Hasan Topu 

bottom of page